হেলাল জাহাঙ্গীরের সাক্ষাৎকার

হেলাল জাহাঙ্গীরের সাক্ষাৎকার

তীব্র কুড়িগ্রামের পক্ষ থেকে ডিসেম্বর ২০২০ এ লিখিত পদ্ধতিতে তাঁর এ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। তিনি লিখিতভাবে যে উত্তর দিয়েছেন, তা হুবহু প্রকাশ করা হলো।


প্রশ্ন: হেলাল ভাই, কেমন আছেন?


হেলাল জাহাঙ্গীর: সামাজিক বৈষম্য ও অবক্ষয়ের সাথে সংগ্রাম করে বেঁচে আছি! ছাদহীন আবদ্ধ পরিবেশে। যেখানে প্রেম ও ভালোবাসা দুর্লভ।


প্রশ্ন: আপনার জন্ম কুড়িগ্রামে, এটা ভাবলে আমাদের ভালো লাগে, গর্ব হয়। আপনি কুড়িগ্রামকে কীভাবে অনুভব করেন?


হেলাল জাহাঙ্গীর: কুড়িগ্রাম নিঃসন্দেহে প্রাচীন জনপদ। উত্তরের অন্যান্য জেলার মতোই অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে এগুচ্ছে। কুড়িগ্রামের আকাশ-বাতাস, মৃত্তিকা, মাঠ-ঘাট, লোকজন সকলই তো জানা-শোনার মধ্যে- শিশু যেমন মাতৃকোড়কে অনুভব করে তেমনই আমি কুড়িগ্রামকে অনুভব করি।


প্রশ্ন: আপনি পড়ালেখা করেছেন কোথায়? ছাত্রজীবন কেমন উপভোগ করেছিলেন?


হেলাল জাহাঙ্গীর: পড়ালেখা কুড়িগ্রাম গার্লস স্কুল (পুরাতন), সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়, খলিলগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়, কুড়িগ্রাম সরকারি মহাবিদ্যালয়। ছাত্রজীবন স্বপ্নের উজ্জ্বলতার মতো...


প্রশ্ন: লেখালিখির ব্যাপারটা আপনার পরিবার কীভাবে গ্রহণ করেছিলো?


হেলাল জাহাঙ্গীর: ভালোভাবেই। পরিবারের অনুপ্রেরণা, অবদান রয়েছে অবশ্যই।


প্রশ্ন: আপনি দীর্ঘকাল ধরে নাটক রচনা করছেন, কিন্তু সংখ্যায় এত কম কেন?


হেলাল জাহাঙ্গীর: মোট ৮টি নাটক। মনে করি এগুলো গবেষণালব্ধ লেখা। তাই অল্পই ভালো মনে করি। যেহেতু দু’টি কাব্যনাটক।


প্রশ্ন: কবিতা ও নাটক ব্যতীত অন্যকিছু লেখার কথা ভাবছেন কি?


হেলাল জাহাঙ্গীর: চলচ্চিত্র স্ক্রিপ্ট লেখার ইচ্ছে আছে।


প্রশ্ন: প্রথম দিকে যখন লেখালিখি শুরু করেছিলেন তখন কাদের সহযোগিতা পেয়েছিলেন?


হেলাল জাহাঙ্গীর: উল্লেখ করার মতো বা স্মরণ করার মতো সহযোগিতা কারো পাইনি। তবে ‘ঢাকা থিয়েটার’ আয়োজিত ‘নাট্য লিখন পদ্ধতি’ বিষয়ক কর্মশালায় প্রয়াত আব্দুল্লাহ আল মামুনের কাছে যে শিক্ষাটুকু পেয়েছি তা স্মরণীয়।


প্রশ্ন: কবিতা লেখার জন্য কোন প্রস্তুতির দরকার আছে কি?


হেলাল জাহাঙ্গীর: কবিতা লেখার বিষয়ে পূর্ব প্রস্তুতি থাকা ভালো, কবিতার একটা সুর থাকে, থাকে বহুমুখী ছন্দ, মাত্রা, এ সবকিছুর দিকে সুদৃষ্টি রেখে কবিতার বিষয় এবং উপস্থাপনাকে মনোজ্ঞ করা যায়। এমনকি কবিতায় রূপ ও দর্শনকে ফুটিয়ে তোলা যায়। অবশ্যই সেসব ক্ষেত্রে প্রস্তুতি থাকা দরকার। 


প্রশ্ন: ’৮০-’৯০ দশকের কুড়িগ্রামের সাহিত্য পত্রিকা চর্চা সম্পর্কে কিছু বলুন।


হেলাল জাহাঙ্গীর: তখন বিভিন্ন সংগঠন জাতীয় জীবনের বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করতো। যেমন: উদীচী, সাম্প্রতিক, কুসাক্রী, চেতনা, শিল্পকলা একাডেমি। কিছু মানুষ এসব ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন, যেমন শ্রী তপন কুমার রুদ্র, মানিক চৌধুরী, নেজামুল হক বিলু, খন্দকার মিজান, শাহানুর রহমান, আমান উদ দৌলা, সাইদ হাসান লোবান, ইমতে আহসান শিলু, জুলকারনাইন স্বপনসহ আরো অনেকে। কয়েকটি পত্রিকার নাম দিচ্ছি: ‘সিঁড়ি’, ‘পদাবলী’, ‘বীকন’, ‘দাহ’ ইত্যাদি।


প্রশ্ন: কুড়িগ্রামের এখন যারা নবীন লেখক, তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।


হেলাল জাহাঙ্গীর: বর্তমান প্রজন্ম তুখোড়। তারা মেধা, সমাজ, জীবন, প্রকৃতি, সময় ইত্যাদি গবেষণা করে গতিময় লেখা লিখুক এটাই চাই- চাই তারা নিজের ও অপরের জীবনগুলোকে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে অবদান রাখুক। সমাজে সাম্য আনয়নের জন্য লিখুক। জীবনের দর্শন কী হওয়া উচিত তা নিয়ে লিখুক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্য করার আগে আর একবার চিন্তা করুন, যা বলতে চান তা যথার্থ কি?