জীবনবৃত্তান্ত - অধ্যাপক তপন কুমার রুদ্র


 জীবনবৃত্তান্ত

অধ্যাপক তপন কুমার রুদ্র



জন্ম: ১৫ আষাঢ়, ১৩৫৭ বঙ্গাব্দ, ১ জুলাই, ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ


পিতা: বেণীমাধব রুদ্র

মাতা: জীবনবালা রুদ্র


আদি নিবাস বৃহত্তর ঢাকার বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনী গ্রামে। তবে তপন কুমার রুদ্র কুড়িগ্রাম জেলা শহরেই জন্মগ্রহণ এবং শৈশব কৈশোর অতিবাহিত করেছেন। স্থায়ী নিবাস পুরাতন পোস্ট অফিস পাড়া, কুড়িগ্রাম সদর।


লেখাপড়া প্রথম কুড়িগ্রাম রিভারভিউ হাইস্কুল, তারপর উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ এবং ইংরেজি সাহিত্য বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে পড়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।


শিক্ষিত পারিবারিক পরিমণ্ডলে গড়ে ওঠা লেখক তপন কুমার রুদ্র ছোটবেলাতে তাঁদের নিজ পরিবারকে একটি প্রতিষ্ঠানের আদলেই পেয়েছিলেন। বাবা-কাকারা ছিলেন সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশ শাসন বিরোধী স্বদেশী আন্দোলনের কর্মী; পেয়েছিলেন অত্যন্ত সচেতন স্বভাবের এক জননী। সঙ্গীত, নাটক, রাজনীতি ও খেলাধূলার মত ক্ষেত্রগুলোতে বড় ভাইয়েরা সকলেই যার যার পছন্দের ক্ষেত্রে ছিলেন অত্যন্ত সপ্রতিভ ও সক্রিয়। স্বল্পভাষী স্বভাবের হলেও তপন কুমার রুদ্র ছিলেন অত্যন্ত সংগঠনপ্রিয়।


লেখালেখির প্রতি আগ্রহ ছাত্রজীবন থেকেই। ছাত্ররাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্টতা ছিল গভীর। তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের বিভিন্ন ইউনিটে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ছাত্রজীবন শেষে সাংস্কৃতিক আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট হন। তিনি নয় বছরেরও বেশি সময় উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি ছিলেন। কবি বা লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবার ব্যবসায়িক মনোভাবে তিনি আস্থা রাখেন নি। স্কুল কলেজের বার্ষিকী, বিভিন্ন বছরে একুশে সংকলন এবং স্থানীয় পত্র পত্রিকায় তারঁ লেখা কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ইত্যাদি ছাপা হত। একসময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য প্রচুর গীতিনক্‌শা লিখেছেন। তবে অধ্যাপনা জীবনেই তিনি শুরু করেন মূল লেখালেখির কাজ।


পেশায় ছিলেন ইংরেজি বিষয়ের অধ্যাপক। বিভিন্ন সরকারি কলেজে শিক্ষকতা শেষে সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল বেগম রোকেয়া সরকারি কলেজ, রংপুর। প্রফেসর পদে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে চাকুরি থেকে অবসর নিয়েছেন।


শখ বা খেয়ালের বশে নয়, বরং ঐতিহ্য, সমাজবাস্তবতা, জাগতিক ঘটনাচক্র এবং মনস্তাত্ত্বিক বৈচিত্র বিশ্লেষণ ইত্যাদি সার্বজনীন বিষয়গুলোর উপরও আলোকপাত করাকে বড় দায়িত্ব মনে করতেন। বিকাশমুখী মানব সমাজের বিন্যস্ত ভাব-প্রবণতা, সত্য উপলব্ধির নানা স্তর ও জিজ্ঞাসাগুলোকে আঙ্গিকদান করার দায়িত্ব নেয়াকে জীবনের ব্রত বলে মনে করতেন। সেই কারণে পেয়েছেন অসংখ্য গুণগ্রাহী, বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষী মানুষের ভালবাসা।


তপন কুমার রুদ্র প্রয়াত হন ০২ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে।


প্রকাশিত বই -


কাব্য

* কবিতায় শ্রেণীঘাত। ফেব্রুয়ারি ২০০৭

* মাকে বলা আমার কিছু মিথ্যে কথা এবং… । ফেব্রুয়ারি ২০০৯

* জলের বুকটাও দেখে ফেলেছি । ফেব্রুয়ারি ২০১২


উপন্যাস

*  অংশী। ফেব্রুয়ারি ২০১০। মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ, শরণার্থীদের জীবন ও নারী-পুরুষ রহস্যভিত্তিক উপন্যাস


প্রবন্ধ

* সীমানার সাথে যুদ্ধ। ফেব্রুয়ারি ২০০৮। বাঙালি সংস্কৃতি, ভাষা, রবীন্দ্রনাথ, মুক্তিযুদ্ধ ও বুদ্ধিজীবী প্রসঙ্গে প্রবন্ধ।

* প্রাক পরিচয়। ফেব্রুয়ারি ২০১১। ভাষা, বাংলা-বাঙালি, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রবন্ধ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্য করার আগে আর একবার চিন্তা করুন, যা বলতে চান তা যথার্থ কি?