মাহফুজুর রহমান লিংকনের কবিতায় বহুরূপী প্রেম - রাজ্য জ্যোতি

তীব্র কুড়িগ্রাম - মাহফুজুর রহমান লিংকনের কবিতায় বহুরূপী প্রেম - রাজ্য জ্যোতি

 

কবি মাহফুজুর রহমান লিংকনের কবিতায় বহুরূপী প্রেম উঠে এসেছে নানা আঙ্গিকে। কুড়িগ্রামে বেড়ে ওঠা কবি মাহফুজুর রহমান লিংকনের কবিতা যেন ধরলার ঢেউয়ের মতোই তরল কিন্তু গভীর আর গভীর সেই ক্যানভাস থেকে ভেসে আসা অপরূপ শব্দে কবি লিংকন সৃষ্টি করেন কবিতা।

"মৃত্যুকে অতীতের কবরে দেওয়া যাক! তিনি! জীবিত বর্তমান অভিনয়!" (মৃত্যুর কার্নিভাল)

মৃত্যুকে অতীতে কবর দিয়ে, জীবিত থাকার অভিনয় করতে চান কবি মাহফুজুর রহমান লিংকন। এমন লাইন লিখে কত পাঠককেই না তিনি কবিতার গভীরে ফেলেছেন। যে গভীর থেকে রস শুষে নিয়ে পাঠক আরোহণ করেন কবিতার শীর্ষে। 

যে কবির কাছে জীবিত থাকাটাই অভিনয়, সেই কবির কবিতায় বিভিন্ন রূপে এসেছে প্রেমের বার্তা। সবকিছুকেই যে ভালোবাসা যায় তাই পাঠককে দেখিয়েছেন এই কবি। হয়তো এ কারণেই তীব্র কুড়িগ্রামের এ দারুণ আয়োজন!

"যে দ্যাখায় দূরত্ব বাড়ে
সে দ্যাখা না-ই'বা হলো আর" (প্রেমের কবিতা)

তাঁর কবিতায় উঠে এসেছে প্রেমের কথা। উঠে এসেছে প্রেমে ব্যর্থতার সুর। ব্যর্থতার সুরে কবি লিখেছেন, যে দেখা দূরত্ব বাড়ায় সে দেখা হওয়ার থেকে না হওয়াই ভালো। যে দেখায় ছেদ হয় সে দেখা নাই বা হলো। তার থেকে সেই অদেখাই ভালো যেই অদেখায় হারিয়ে যায় না বুকের পাঁজরের ভিতরের প্রিয় মানুষটি।

"তুমি কি জানো না, তোমাকে
নীল টিপেই সুন্দর লাগে বেশি।" (ভালো থেকো)

কবির চোখে হয়তো তার প্রেমিকা সবচাইতে সুন্দরী রমণী। কবির চোখে তাঁর প্রেমিকাকে নীল টিপে দারুণ লাগে। একজন শুদ্ধ প্রেমিকের মতোই কবি নির্মাণ করেন তার প্রেমিকাকে, নীল টিপ যেনো সেই নির্মাণের এক অনিবার্য উপাদান।

"ক্ষণিকের অতিথি
দ্যাখা হলো ঝমঝম রেলে।
প্রেম।
রেলের প্রসাধন। সজ্জারুমে
মুখ না তুলে
বুক না খুলে!" (স্বল্পদৈর্ঘ প্রেমচিত্র)

রেলগাড়ির ঝমঝম শব্দেই ক্ষণিকের মধ্যে ভালোলাগা, প্রেমে পরা এবং সেই প্রেমে সফলতা না পেয়ে লবণাক্ত জলে চোখ ভিজিয়েছেন কবি, মুখ না তুলেই, বুকের আওয়াজ বুকেই রেখেই।

কবি মাহফুজুর রহমান লিংকন কবিতায় সৃষ্টি করেন নিজস্ব জগৎ। শব্দে শব্দে সৃষ্ট সেই জগতে হারিয়ে যেতে হবে যেকোন পাঠককেই, কবিতার আলিঙ্গনে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্য করার আগে আর একবার চিন্তা করুন, যা বলতে চান তা যথার্থ কি?