’তীব্র কুড়িগ্রাম’ এর পঞ্চম সংখ্যায় আলোচ্য ব্যক্তিত্ব প্রথিতযশা আধুনিক কবি মিজান খন্দকার। বাংলা সাহিত্যের যাত্রাপথে তাঁর পদচারণা পরিমিত, মার্জিত। নিরন্তর অন্বেষণে অনুগমন করেন সফলতম শব্দধারার। কাঙ্ক্ষিত শব্দের অপেক্ষায় প্রলম্বিত হন মহাকালের সামনে। এই পরিশ্রমী পরিচর্যার চিহ্ন তাঁর সৃষ্ট শিল্পসমূহে স্পষ্টতর দৃশ্যমান। কবিতা গল্পের আধুনিক উপস্থাপনে মিজান খন্দকার স্বকীয় স্বরের নির্মাণ করেছেন। শব্দ যোজনার মৌলিকত্ব তাঁর মেধাবী শিল্পসত্ত্বার অন্যতম পরিচায়ক।
মিজান খন্দকারের অবর্তমানে তাঁকে নিয়ে 'তীব্র কুড়িগ্রাম' পত্রিকার সংখ্য প্রকাশ করা এক বেদনাবহ অভিযাত্রার মত দুরূহ। স্বনামের সংখ্যা নিয়ে তিনি কৌতুহলী ছিলেন। ভেবেছিলেন শত পরিকল্পনা। কিন্তু পরিকল্পিত সাক্ষাৎকারটি পাওয়া হল না, আংশিক লিখিত উপন্যাসটির কথা ঘোষণাতীত থেকে গেল; নতুন লেখা নাট্যচিত্র নিয়ে তাঁর ভাবনাগুলোও অনুচ্চ থেকে গেল। তাঁর নিজ নামীয় সংখ্যার প্রচ্ছদ, আলোচনা এবং লেখক সম্পর্কে দিয়েছিলেন নানাবিধ পরামর্শ। কিন্তু সব আশা গুড়েবালি হয়ে গেল, করোনাকাল নিয়ে এল আতংক ও পরাজয়। মিজান খন্দকারের হঠাৎ প্রস্থানে আমরা আর্ত ও কাতর।
প্রসঙ্গক্রমে জানানো হল যে- ’তীব্র কুড়িগ্রাম’ এর ১ম সংখ্যায় প্রাবন্ধিক ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক তপন কুমার রুদ্র’কে বন্দনা করে মিজান খন্দকার 'আচার্য সমীপে' শিরোনামের একটি কবিতা লিখেছিলেন। কয়েক সপ্তাহ পর উক্ত কবিতাটি কিঞ্চিৎ পরিবর্তিত অবস্থায় জাতীয় দৈনিক ’প্রথম আলো’ পত্রিকায় ছাপা হয়। প্রকাশিত রূপ হাতে নিয়ে দেখার পর কবি মিজান খন্দকার নিজের করা পরির্বতনগুলোকে আর পছন্দ করেননি এবং ’তীব্র কুড়িগ্রাম’ এর ১ম সংখ্যায় ('তপন কুমার রুদ্র' সংখ্যা, সেপ্টেম্বর ২০২০) প্রকাশিত কবিতাটিকে মূল ভাষ্য বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, বাংলা সাহিত্যে মিজান খন্দকারের অবস্থানকে স্মরণীয় করে রাখতে 'মিজান খন্দকার স্মারক বক্তৃতা' এবং 'মিজান খন্দকার সাহিত্য পুরস্কার' প্রবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে 'তীব্র কুড়িগ্রাম'। 'মিজান খন্দকার স্মারক বক্তৃতা' কুড়িগ্রামের মননশীল মানুষের সাহিত্য অনুধ্যানকে আরও বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করবে এবং কুড়িগ্রাম জেলায় জন্ম নেয়া তরুণ লেখককে অমরলোকের স্বপ্ন দেখাবে 'মিজান খন্দকার সাহিত্য পুরস্কার'। প্রথম আয়োজন সম্পর্কে ঘোষণা রয়েছে শেষ প্রচ্ছদে।
’তীব্র কুড়িগ্রাম’ এর পঞ্চম সংখ্যায় তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি। বাংলাভাষী শিল্পপ্রবণ মননশীল মানুষের মনে তিনি চিরস্মরণীয় বলে বিবেচিত হবেন। এই সংখ্যায় মিজান খন্দকারের শিল্পকীর্তির তিনটি পর্যবেক্ষণ উপস্থাপন করা হল। প্রত্যাশা করি কৌতুহলী পাঠক নিরাশ হবেননা।
স্বীকার করা হল যে, পাঠ অভিজ্ঞতার যাবতীয় কৃতিত্ব লেখকগণের এবং ব্যর্থতা সম্পাদকের।
উল্লেখ্য যে, রচনাসমূহের শব্দবিধি ও বানান লেখকগণের নিজস্ব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
মন্তব্য করার আগে আর একবার চিন্তা করুন, যা বলতে চান তা যথার্থ কি?