মাহফুজুর রহমান লিংকনের সাক্ষাৎকার

কবি মাহফুজুর রহমান লিংকনের সাক্ষাৎকার


২০২২ খ্রিস্টাব্দে অনলাইন লিটল ম্যাগাজিন 'ওয়াকিং ডিসট্যান্স' সম্পাদক তানজিন তামান্না কবি মাহফুজুর রহমান লিংকনের এ সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন। সুদীর্ঘ সাক্ষাৎকার থেকে নির্বাচিত অংশ আমরা 'তীব্র কুড়িগ্রাম'-এর পাঠকের জন্য প্রকাশ করলাম। 'ওয়াকিং ডিসট্যান্স' কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।


প্রথম পর্ব: যে উত্তরতম হেঁটে আসো


প্রশ্ন: এই পর্বে আপনার কাছে জানতে চাইছি আপনার লেখালেখি শুরুর গল্পটা। কখন এবং কীভাবে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করলেন? লেখক হবার ইচ্ছাটা কি ছোটবেলা থেকেই ছিলো?


উত্তর: ভাল আছি, আবার ভাল নেই! আমার নিজস্ব একটা ধারণা আগে বলে নেই, আমার মতে (বয়স) ৪০'র আগে কোন কবির ভালো থাকা উচিৎ না। কারণ ৪০'র পর কোন কবিই আসলে নতুন করে লিখতে পারে না। ৪০'র পর কবি যা লিখে সব লেখাই, কবির আগের লেখার সংস্করণ এর মতই আমার কাছে মনে হয়। তাই আমার কাছে মনে হয়, (বয়স) ৪০'র আগে কবি বিভিন্ন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে চলবে, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে নিয়ে খেলা করবে, ভালো থাকা না থাকা নিয়ে কবির ভাবার সময় কোথায়?


প্রশ্ন: লেখালেখি শুরুর গল্পটা...


উত্তর: প্রথমত আমার স্মৃতিশক্তি দুর্বল, দ্বিতীয়ত আমি ইনিয়ে-বিনিয়ে বানিয়ে বলা পছন্দ করিনা। তাই সত্য গল্পটা এই যে, আমি নিজেও জানিনা লেখালেখি কবে থেকে শুরু করেছি তবে বুঝতে পেরেছি যখন আমি সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। এখানে একটি কথা নিঃসঙ্কোচে বলতে পারি- কুড়িগ্রামের মত সাজানো-গোছানো, নদীর আনাগোনাময়, ছোট্ট শহরটা আমাকে কবিতার মানুষ করে তুলেছে। "কিশোর বয়সে প্রতিটি বাঙালি কবিতা লিখে"- এমন একটা প্রবাদ আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে, আমিও তার বাহিরে নই হয়ত... তবে ১৯৯২ সালের শুরুর দিকেই কবিতা লেখার কাজটা খুব গভীরভাবে আমি উপলব্ধি করি, সেই থেকেই শুরু...


আমার বাবা প্রবাসী ছিলেন, আমি তাঁর প্রথম সন্তান। তাঁর স্বপ্ন ছিল, আমাকে ডাক্তারি পড়াবেন। আমার আকাঙ্ক্ষা ছিল শুদ্ধ মানুষ হব, তাই প্রেম হয়ে গেল কবিতার সাথেই।


প্রশ্ন: 'কবিতায় ছন্দ' প্রসঙ্গে আপনার অভিমত কী?


উত্তর: কবিতা কি ছন্দ ছাড়া হয়? প্রতিটি কবিতায় ছন্দ অনিবার্য। তবে, একথা স্বীকার করতেই হবে- আমাদের অগ্রজরা যেমন অক্ষরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত, ছন্দবৃত্তে লিখতেন, সমসাময়িক কবিরা সেই ছন্দের তালে না গিয়ে বরং পঠনছন্দ, শ্বাসছন্দে লিখছেন। মজার বিষয় এই যে, আমাদের পাঠকরা এই ছন্দগুলো সম্পর্কে জানেন না, কিংবা বলা যায় এই ছন্দে অভ্যস্ততা না থাকায় এই ছন্দকে গ্রহণযোগ্য মনে করছেন না, এতটুকুই শুধু। ছন্দের জাদু না থাকলে কী করে কবিতার শরীর গড়ে উঠবে!


দ্বিতীয় পর্ব: সমুদ্দুরে চোখ


প্রশ্ন: আপনি লিটলম্যাগ 'বিন্দু' এর সঙ্গে কাজ করছেন। লিটল ম্যাগাজিনের কর্মী হিসাবে দেখতে নিজেকে কেমন লাগে? লেখালেখির শুরু থেকেই কি এমনটা ভাবতেন যে লিটল ম্যাগাজিনই আপনার সাহিত্য চর্চার জায়গা?


উত্তর: ভারতবর্ষে প্রাচীন সাহিত্যে 'শিল্প' শব্দের ব্যুৎপত্তি দেখলে, এর পরিচয় সহজেই অনুমেয়। যেমন: "শিল্পং কৌশলং শীলসমাধৌ"। 'শীলসমাধৌ'- নিপাতনে শিল্প- শব্দ নিস্পত্তি হয়েছে। এখানে সমাধির, চিত্তবৃত্তির নিমগ্নতা উল্লেখ করে, নিমগ্নতা সমুদ্ভাবিত কৌশলে উৎপন্ন বস্তু বলে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এই ব্যুৎপত্তি হয়ে সহজেই বোঝা যায় যে, সকল শিল্পই কৌশলে উৎপন্ন।


সকল শিল্পের সৃষ্টি রহস্য এক। কিন্তু সকল শিল্পের লক্ষ্য এক নয়। লক্ষ্যের দিক থেকে শিল্প দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এক শ্রেণির শিল্পের মূল লক্ষ্য- যেকোন উপায়ে অভীষ্ট সাধন, এটা পণ্যমুখী শিল্প। আর এক শ্রেণির শিল্পের মুখ্য লক্ষ্য সুন্দরের প্রকাশ, মতান্তরে সত্যের প্রকাশ, এটা সুকুমার শিল্প নামেই পরিচিত। সুকুমার শিল্প ব্যাতিত কোন শিল্প শিল্প নয়, পণ্যদ্রব্য।


জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষ তাঁর অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে আত্ম-উপলব্ধি করতে শেখে, ভালো মন্দের। আমিও সেটার ব্যতিক্রম নই, লেখালেখির শুরুতে আসলে কিছুই ভাবা হয় নি, শুধু জানতাম লিখতে হবে। শুরুর দিকে স্থানীয় অনেক পত্রিকায় লেখালেখি করেছি, তবে পরবর্তীতে লিটল ম্যাগাজিনেই আমার নিরাপদ আশ্রয় বলে স্থির করেছি...


প্রশ্ন: 'বিন্দু'-র সঙ্গে আপনার যুক্ত হবার গল্পটা জানতে চাই। কীভাবে এবং কখন 'বিন্দু' এর সঙ্গে আপনার কাজ শুরু হলো?


উত্তর: বিন্দু মানেই আমার আবেগ। বিন্দু মানেই আমাকে পুনর্জীবিত করার মন্ত্র। কারণ যদি বলতে যাই, অনেক কাহিনী, অনেক অপ্রিয় সত্যকে বলতে হবে তাই কারণ না জেনে শুধু এতটুকু জানতে পারেন, ২০০২-এ আমি কুড়িগ্রাম ছেড়ে চলে যাই। মাঝে প্রবাসেও ছিলাম...। ২০১২ সালে আমি দেশে ফিরে কুড়িগ্রামে যাই।


২০১২ সালের মাঝামাঝি সময় বিন্দু'র মূল কাণ্ডারি কবি সাম্য রাইয়ানের সাথে পরিচয় তুলশি দাদার দোকানে। সাম্যর সর্ম্পকে আগেই সামান্য কিছু জেনেছি বটে, (এখানে বলে রাখি, সে সবই নেগেটিভ কথা, গালাগালি ধরনের। একজন মানুষ সম্পর্কে যত ধরনের হিংসাত্মক বাজে কথা বলা যায়, প্রায় স-ব) কিন্তু পরিচয়ের পর ধ্যান-ধারণা বদলে গেল। এরপর ইতিহাস...


একদিন সন্ধায় সাম্য এসে বলল- 'ভাই, আমরা প্রতিদিন এক পাতার একটা কবিতার পত্রিকা বের করছি, আপনার একটা কবিতা দেন।' শুনে অবাক হয়ে গেলাম, শুধু কবিতার দৈনিক পত্রিকা! অকল্পনীয়। আমি অনেক পুরনো একটা পত্রিকা (আমার সম্পাদনায়) ওকে দিয়ে বললাম, এখান থেকে যেটা ভালো লাগে নিয়ে নে ভাই। সেই থেকে শুরু...


জীবিকার প্রয়োজনে ঢাকা চলে আসি, কিন্তু সাম্য আর বিন্দু আমার পথ চলার পাথেয় হয়ে রইল। বিন্দু'র সাথে মিশে গেলাম বিন্দু হয়ে। মজার বিষয় হল, বিন্দুতে দীর্ঘদিন আমার একটি লেখাও প্রকাশ হয় নি, আমি দুই হাতে লিখে যাচ্ছি, সাম্য'র সাথে লেখা নিয়ে আলোচনা করে যাচ্ছি। কিন্তু সাম্যকে কখনোই বলার সাহস পাচ্ছি না যে "সাম্য, আমার লেখা কি দেয়া যাবে বিন্দুতে?" যারা বিন্দু সম্পর্কে বলেন, বিন্দুতে শুধু তাদের লেখাই ছাপা হয়, যাদের সঙ্গে সাম্য-সবুজের সম্পর্ক ভালো। তাদের উদ্দেশ্যে অতি বিনয়ের সাথে বেয়াদবের মতো বলতে চাই, ভাইজানেরা! আমার লিংকনের লেখাও ছাপা হয় নাই বিন্দুতে ততক্ষণ, যতক্ষণ না বিন্দুর সম্পাদনা পরিষদ (সম্পাদনা পরিষদ না বলে বলা যায় বিন্দু পরিবার) মনে করেছে, 'এগুলো কবিতা'।


প্রশ্ন: কাজ করার ক্ষেত্রে কখনও কি কোন প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে? এমন পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছেন কীভাবে?


উত্তর: দেখুন, আমি আমার ভিতরে একটি মতাদর্শকে লালন করি। সেটা হল- শিল্পী তাঁর সমস্ত শক্তি দিয়ে তাঁর শিল্প মাধ্যমে সমস্ত অসত্যকে, অসুন্দরকে, অমঙ্গলকে দূর করে দিবে, তবেই তাঁর শিল্পের সার্থকতা। শিল্পের যুদ্ধ অসত্যের বিরুদ্ধে, অসুন্দরের বিপরীতে। সমগ্র পৃথিবীতে (আমাদের দেশও এর বাহিরে নয়) অসত্য, অসুন্দর, অমঙ্গলে পরিপূর্ণ এখানে একজন শিল্পীকে পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ, রাষ্ট্রযন্ত্র সকলের কাছেই সত্যের, সুন্দরের মঙ্গলময়তার বার্তা পৌঁছে দিতে হয়, কাজেই শিল্পীকে প্রতিকূল পরিস্থিতির ভিতর দিয়েই চলতে হয়। আমিও এর বাহিরে নই। ব্যক্তিগত আক্রমণ বহুবার সহ্য করতে হয়েছে, প্রতিনিয়ত করে চলেছি, রাজনৈতিকভাবেও আক্রান্ত হয়েছি...। সাদামাটা ভাষায় যদি বলি, যার যত বেশি সহন ক্ষমতা থাকবে, ভিতরে তার দহন ততই বেড়ে চলবে, সেই দহনে গতি আসতে বাধ্য।


সব ক্ষেত্রে আমি নিজেও আবার এই প্রক্রিয়ায় ভিতর দিয়ে যে যাই, তা নয়। কখনো প্রতিবাদ করেছি, কখনো সয়ে নিয়েছি। তবে প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে সবচেয়ে যে প্রক্রিয়া বেশি অবলম্বন করেছি, তা হল- 'টিম ওয়ার্ক'। অর্থাৎ সম্মিলিতভাবে আলোচনার মাধ্যমে সৃষ্টিতে সত্য সুন্দরের জন্ম দিয়ে প্রতিবাদ করে।


আপনার বাচন ভঙ্গিতে যদি বিনয়ী ভাব থাকে তাতে আমি সমস্যা দেখি না, কিন্তু সেখানে বিনয়ের সাথে দৃপ্ততা থাকতে হবে, অর্থাৎ তুমি তোমার অসুন্দরে যেমন অনড়, আমিও বিনয়ের সাথে আমার সুন্দরের প্রতি অনড়। শুধু মনে রাখতে হবে, সত্য সুন্দরের জয় অনিবার্য।


প্রশ্ন: অনেকে লিটল ম্যাগাজিনের সাথে ব্লগজিন বা ওয়েব ম্যাগাজিনের বিরোধীতা আছে বলে মনে করে। এ বিষয়টা নিয়ে আপনার নিজস্ব মতামত কী? 


উত্তর: আমাদের সমাজে দুই জাতের নৃত্যশিল্পী আছে, এক জাত বুঝে-শুনে নৃত্য করে আর এক জাত না বুঝে- না শুনে নৃত্য করে। যাঁরা বুঝে-শুনে নৃত্যের কলা কৌশল জেনে নৃত্য করে তাঁদের সাথে এ নিয়ে আলোচনা করা যায়। অন্যদিকে আবালদেরকে পরিত্যাগ করাটাই শ্রেয়! ঘুরে ফিরে এক জায়গাতেই আসতে হচ্ছে, আপনার মূল কাজ শিল্পের মুক্তি, সুন্দরের জন্ম দেয়া। আপনি কোন পথে সেটা করবেন এটা মুখ্য নয়।


প্রাতিষ্ঠানিক যত কু-কলাবৃত্তি আছে সবগুলো ঢুকিয়ে দিয়ে বলেন, আমি শিল্পের মুক্তি দিচ্ছি, সুন্দরের অবগাহন করছি। তাহলে তথাকথিত শিল্প বোদ্ধার কাছে আরামদায়ক হলেও, প্রকৃত শিল্পবোদ্ধার কাছে তা হবে হাস্যকর।


আমি বিশ্বাস করি- লিটল ম্যাগাজিন হোক আর ব্লগজিন বা ওয়েব ম্যাগাজিন হোক, এগুলো শিল্পের মুক্তি দেয়ার, সুন্দরের জন্ম দেয়ার এক একটি হাতিয়ার। সে হাতিয়ার যদি মিথ্যার বিরুদ্ধে, অসুন্দরের বিপরীতে যুদ্ধ করে সুন্দরের জাতক হয়, তা নমস্য।


প্রশ্ন: লেখকদের জন্য সিন্ডিকেটের বিষয়টাকে কীভাবে দ্যাখেন? একজন লেখকের জন্য আদৌ কি এর কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে?


উত্তর: একটু হেসে নেই (হা হা হা...), এবার বলি- আমি দলাদলি-গলাগলি একেবারে পছন্দ করি না। মজার বিষয় হল, এই সিন্ডিকেটগুলো আমি চেনার বা জানার চেষ্টা করিনি, করতে চাইও না। তবে, অনেক লেখকদের মাঝে 'পীর-মুরিদ' একটা ব্যাপার আমি লক্ষ্য করেছি। এতে ফায়দা আছে বলে আমার মনে হয় না। যারা সিন্ডিকেটে আবদ্ধ আছেন তাদের জন্য শুধু এটুকু বলতে পারি- সমস্ত পৃথিবী জ্ঞানের ভাণ্ডার, যেখান থেকে যা পাবেন, সেটাকে লুটে নিয়ে, আপনার মননে, সৃজনশীলতায়, সৃষ্টিতে ঢেলে দিয়ে আপনার সৃষ্টিকে তথা আপনার প্রেয়সীকে সাজান। সারা পৃথিবী আপনাকে স্যালুট করবে। এইসব দলাদলি-গলাগলি আপনাকে সাময়িক তুষ্টি দিতে পারে, কিন্তু তা আপনাকে ধ্বংস করে দিতে সময় নেবেনা। অতএব, সাধু সাবধান!


প্রশ্ন: লেখকের লেখালেখির জন্য আড্ডা কি কোনো ভূমিকা রাখে? 


উত্তর: হ্যাঁ, এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আগে বলে নেই, আমি ভীষণরকম আড্ডাবাজ মানুষ। যদি সৃষ্টিশীল কিছু মানুষ একখানে হয়ে, সাধারণ ভাষায় আমরা যাকে আড্ডা বলছি, এই কাজটি করে তাহলে এটা ঐ মানুষগুলোর জন্য অনেক গুরুত্ব বহন করে। কারণ, এসব আড্ডা থেকে যেমন অনেকে চলার পথ খুঁজে পায়, তেমনি অনেকে আবার চির চেনা পথে চলা ছেড়ে দেয়।


সৃষ্টিশীল মানুষেরা যখন একসাথে মিশে যায় তখন সেখানে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, ধর্ম, বিজ্ঞান, শিল্প, অশিল্প সকল বিষয়ে আলোচনা হয়, একে অপরের জ্ঞানে পরিপূর্ণ হয়। অচেনা-অজানা বিষয় হাজির হয়ে জ্ঞানের পিপাসাকে বাড়িয়ে দেয়। নিজেকে জানার, চেনার একটা উপায় আমার কাছে মনে হয়- আড্ডাবাজি করা। আপনার চিন্তা- চেতনাকে আপনি যেমন অন্যের মাঝে প্রসারিত করতে পারছেন, তেমনি অপরের চিন্তায়-চেতনায় আপনাকে রাঙিয়ে নিতে পারছেন আড্ডার মাধ্যমে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্য করার আগে আর একবার চিন্তা করুন, যা বলতে চান তা যথার্থ কি?